প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
তেইশান্তে প্রেমালোক | অভিশপ্ত তেইশের আগমন
ঢাকা শহরের বিল্ডিং গুলোর মধ্যে একটির ১২ তালায় অবস্থিত একটি রুমে রায়ান চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। পুরো রুমটা নিরব। রায়ানের এক পাশের জানালা দিয়ে দক্ষিনা বাসাত বইছে। রায়ানের সামনেই একটা চেয়ারে বসে আছেন তার সহকর্মী মিঃ ইভান।
“রায়ান, আমার কথাটা একটু শুনো। আমি তোমার ভালোর জন্যই বলছি। এতে তোমার জিবনের অনেক বড় ঝুঁকি আছে। রায়ান সংখ্যাটা…”
“আপনি এখন আসতে পারেন”
ইভানের কথা শেষ হওয়ার আগেই রায়ান তাকে চলে যেতে বলে। রায়ানের এমন কথায় ইভান এবার বেশ অপমানিত হল। তাই আর কোন কথা না বারিয়ে বের হয়ে গেল। এমনিতেও ও তো আর রায়ানের কোনো ভালো করতে আসে নি। আসছিল তো ভুলভাল বুঝাতে। অন্য তো সময় এই লোকের খোঁজও পাওয়া যায় না। কিন্তু রায়ানের হাতে কোন বড় কেস আসলেই চলে আসে ভুলভাল বুঝাতে। যেমন আজকে রায়ানের হাত থেকে এতো বড় কেসটা নিতে একটা সাধারন সংখ্যাকে অভিশপ্ত বলে প্রমান করতে চাচ্ছিল। অবশ্য কেসটাতেও এমনটাই লেখা।
তাজওয়ার হোসেন রায়ান পেশায় একজন দক্ষ গোয়েন্দা। আজ পর্যন্ত কোন কেস অর হাত থেকে মিস যায় নি। একজন গোয়েন্দা হওয়ায় রায়ানকে অনেক আজব আজব কথা এবং অদ্ভুদ অদ্ভুদ কেস দেখেছে। কিন্তু আজকের কেসটা একটু বেশিই আলাদা। যেখানে কিনা একটা সংখ্যাকে অভিশপ্ত বলা হয়েছে। একটি সাধারন সংখ্যা ২৩ মানুষকে আত্ম*হত্যা করতে বাধ্য করে। রায়ানকে কেসটা সম্পর্কে জানানো হয়েছে মাত্র আধা ঘণ্টা আগে। সে কেসটা সম্পর্কে জানার পর থেকে এখন পর্যন্ত একই ভাবে চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। ও চোখ বন্ধ করে রেখেই সামনের টেবিলে পরে থাকা ফোনটা হাতে নিলো। সেভাবেই ফোনে কাওকে কল দিলো। কলটা রিসিভ হবার সাথে সাথে রায়ান নিজে থেকে কলটা কেটে দিলো। যার মানে রায়ান ফোনের অপাশের ব্যাক্তিতির সাথে সামনা সামনি কথা বলতে চায়। প্রায় ৩ মিনিটের মাথায় একজন যুবক রায়ানের রুমের সামনে উপস্থিত হলো।
“স্যার আসবো?”
যুবকটির কথায় রায়ানের কোন রকমের হেলদোল হল না। যুবকটি স্বাভাবিক ভাবেই রুমে প্রবেস করলো। যুবকটি জানে ওর সাথে কথা আছে বলেই রায়ান ওকে অভাবে ডেকেছে। তাই ও চুপচাপ ভিতরে আসে রায়ানের সামনে দাঁড়ালো।
“আমাকে সব ডিটেইলসে বল”
রায়ানের কথায় মাসুম নামক যুবকটি ভাবনায় পরে গেলো। মনে মনে ভাবল,
“এই লোকের পিএ হওয়া মোটেও সোজা না ভাই! ডিরেক্ট কথাতে মনে হয় এনার এলারজি আছে। এই অস্বাভাবিক ব্যাক্তির অস্বাভাবিক কথার অর্থ বুঝতে আমাদের মতন স্বাভাবিক মানুষের ৭ জনম প্রয়োজন”
“কুইক”
“জি স্যার! আসলে… আপনি কি আজকের কেসটার বিষয়ে বলছেন?”
মাসুমের কথায় রায়ান কিছুই বলে না। বরং একই ভাবে চোখ বন্ধ করে থাকে। কথায় আছে, মৌনতা সম্মতির লক্ষন। রায়ান যেন সবসময় এটা মেনে চলে। মাসুমও রায়ানের এ স্বভাব সম্পর্কে অবগত। তাই ও বলা শুরু করলো,
“স্যার, এই কেসটা আজ পর্যন্ত আপনার কাছে আসা সকল কেসের চেয়ে বড়। আসলে এটা অনেক বড় পর্যায় থেকে এসেছে। আপনার আগেও অনেক গোয়েন্দাকে এই কেসটা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেও সফল হতে পারে নি”
“এত বড় পর্যায়ের কেস এতটা হাস্যকর হওয়াটা সোভা পায় না”
“জি স্যার। কথাটা অদ্ভুদ হলেও সত্য যে, একটা সংখ্যা মানুষকে ধবংস করে দিচ্ছে! আর অথোরিটি বিষয়টা বিশ্বাসও করছে”
“অথোরিটির মাথা গেছে”
কথাটা বলেই রায়ান চেয়ার থেকে উঠলো। ৬ ফুট লম্বা সুঠম দেহ বিশিষ্ট তামাটে চেহারার ৩০ বছর বয়সী এক গম্ভীর পুরুষ রায়ান। অল্প বয়সেই ভীষণ নাম কামিয়েছে ও। নিজের সকল স্বপ্নই পূরণ করেছে রায়ান। এককথায় ও একজন সফল পুরুষ।
“স্যার! আপনি কি এই কেসটা নিয়ে আগাবেন? না মানে… অনাদের জানানো লাগবে তো”
“আমি কি আজ পর্যন্ত কোন কেস নিতে না করছি?”
রায়ান রুম থেকে বের হয়ে যেতে যেতে কথাটা বলল। মাসুম কথাটা শুনেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো আর বিড়বিড়ালো,
“সরাসরি হ্যাঁ বললে কি বোবা হয়ে যেতো?”