সায়মা ইসলাম
সায়মা ইসলাম

প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫

তেইশান্তে প্রেমালোক | মৃত্যুফাঁদ ও হারানো পরিচয়

৩৮ ভিউ
০ মন্তব্য
০ মিনিট

“দাড়াও নিলা… আমাদের কোথাও যেতে হবে না। আমি আমার পিএ মাসুমকে কল করে তথ্য গুলো দিতে বলছি। সে আমাদের তথ্য এনে দিবে। নিলা… তুমি একটা কাজ কর, তুমি তোমার বাসায় যাও। আমি দেখছি বিষয়টা”

রায়ানের কথায় নিলা প্রথমে বাসায় যেতে না চাইলেও পরে রাজি হয়। আর রায়ানকে বিদায় জানিয়ে চলে যায়। রায়ানও উঠে নিজের অফিসের দিকে রওনা দেয়। রায়ান গাড়ি চালিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছিলো। প্রতিবারের মতন এইবারও সে একটা নির্জন রাস্তা দিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছে। এই রাস্তায় গাড়ি অনেক কম থাকে। পিছঠালাই করা চিকন রাস্তাটা অনেক কম মানুষই ব্যবহার করে। তবে বেসিরভাগ সময় এখানে ছোট ছোট রিক্সা বা প্রাইভেট কার দেখা যায়। কোন বড় গাড়ি দেখা যায় না। কিন্তু আজ হঠাৎ সামনে থেকে এক বিশাল ট্রাক রায়ানের গাড়ির দিকে আসতে দেখা যায়। দানবাকৃতি ট্রাকটি অতিরিক্ত স্প্রিডে ছিল। আর দ্রুত রায়ানের গাড়ির দিকেই আসছিলো। ট্রাকটা চিকন রাস্তাটার পুরোটাই দখল করে রেখেছিল। হঠাৎ নিজের সামনে এমন এক বিশাল ট্রাক দেখে রায়ানও কিছুই ভাবতে পারছে না। পুরো রাস্তাটা দখল করে রাখায় ট্রাকটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এমন অবস্থায় হয় ট্রাকটিকে থামতে হবে নয়তো রায়নের গাড়িটিকে ট্রাকটা পিসে দিয়ে চলে যাবে। আর আই মুহূর্তে ট্রাকটির যেই গতি তাতে ট্রাকটি চাইলেও থামতে পারবে না। রায়ান দ্রুত নিজের গাড়ির ব্রেক কষলো। রায়ানের সামনে ট্রাকটা ক্রমশ ওর দিকে আগিয়ে আসছে। রায়ানের মতন বিচক্ষন মানুষ এই মুহূর্তে মৃত্যুর সামনে এসেও কিছুই ভাবতে পারছে না। কি হবে এখন? ট্রাকটি কি রায়ানকে পিসে দিয়ে চলে যাবে? রায়ানের জিবন কি এই পর্যন্তই ছিল? রায়ান কি আর ২৩ এর রহস্য বের করতে পারলো না? রায়ান তো এখনো নিলাকে তার ম্নের কথা বলে নি। রায়ান কি আর কোনোদিন নিলাকে নিজের ম্নের কথা বলতে পারবে না? নিলার সাথে আর একসাথে হাঁটতে পারবে না? নিলা তো এখন একা হয়ে যাবে! নিলা কি পারবে একা একা এতো বড় কেস সামলাতে? নিলা কি আদেও কেসটা থেকে সরে আসতে চাইবে? নিলা আর রায়ানের ভালোবাসার কি হবে? রায়ানের মাথায় এই মুহূর্তে হাজারো প্রশ্ন ঘুরছে। কিন্তু রায়ান কি উত্তর বের করার জন্য সময় পাবে? আচ্ছা… রায়ান নিজের মৃত্যুকে এতো কেন ভয় পাচ্ছে? দুই দিন আগেও তো রায়ানের বেঁচে থাকারই ইচ্ছা ছিল না। রায়ানের জিবনে তো বেঁচে থাকার জন্য কোন উদ্দেশ্যই ছিল না। তাহলে এখন? এখন কেন রায়ান বাঁচতে চাচ্ছে? কিসের জন্য ও বাঁচতে চাচ্ছে? ওর জিবনে কি এমন হল যে ওর বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করছে? আচ্ছা… রায়ানের বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য কি নিলা? রায়ান কি নিলার জন্য বাঁচতে চাইছে? হয়তো! হয়তো রায়ান এখন নিলার জন্য বাঁচতে চাইছে। কিন্তু ট্রাকটি যে রায়ানের গাড়ির একদম সামনে চলে এসছে। রায়ান দেখতে পাচ্ছে ট্রাকটা ওর থেকে মাত্র দশ হাত দূরত্বে আছে। ট্রাকটা একই গতিতে ওর দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে। রায়ান এবার আর কিছু ভাবলো না। ট্রাকটি যখন রায়ানের থেকে মাত্র দুই হাত দূরে তখনি রায়ান এবার ধিরে ধিরে নিজের চোখ বন্ধ করে নিলো।

বিল্ডিংয়ের ৫ তালার দক্ষিণ পাশের রুমটাই নিলার রুম। রুমটার বড় জানালা দিয়ে দক্ষিণা বাতাস এসে রুমটাকে সবসময় শীতল করে রাখে। নিলা মাত্রই সাওয়ার নিয়ে বেড়িয়েছে। ভেজা ঘন চুলগুলো খোলা রেখেছে। ভেজা চুলগুলো থেকে ফোটা ফোটা পানি পরে আকাশী রঙের কামিজটার পিছনের অনেকাংশ ভিজে গেছে। নিলা ছোট ছোট পায়ে হেঁটে জানালার পাসে বসলো। জানালার পাসে বসায় বাতাস এসে নিলার মুখে আছড়ে পরছে। নিলা সেখানে কিছুক্ষন বসে থেকে আবার উঠে দাঁড়ালো। কিছু একটা ভেবে একটা ছোট টেবিলের দিকে গেলো। সেখানে অনেক ধরনের বই রাখা। দেখে মনে হচ্ছে এগুল নিলার প্রতিদিনের ব্যবহারে আসে বলেই টেবিলের উপর রেখেছে। নয়তো অন্য বইগুলা রুমের একপাসের সেলফে রাখা। নিলা টেবিলের কাছে গিয়ে সেখান থেকে একটা ডাইরি হাতে নিলো। তারপর ধিরে ধিরে ডাইরিটার একটা পৃষ্ঠা খুললো। খুলতেই সেখান থেকে একটা ছবি বের হয়ে আসলো। নিলা ছবিটা দেখেই হালকা মুচকি হাসলো। তারপর আলতো করে যত্নের সাথে ছবিটা নিজের হাতে নিলো। ছবিটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এটা অনেক বেশি পুরনো ছবি। কারণ ছবিটা নিলার ছোটকালের। তবে সেখানে নিলার সাথে আরও একজন আছে। ছবিতে নিলার সাথে একটা ছেলে আছে। যে কিনা নিলা দিকেই তাকিয়ে আছে। ছেলেটা গভীর ভাবে নিলার চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে। আর নিলা হাসিমাখা মুখ নিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। ছবিতে নিলার বয়স ১০ ছেলেটার ১৩ বছর। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছবিতে নিলা প্রস্তুত থাকলেও ছেলেটি প্রস্তুত নেই। ছেলেটি নিলাকে দেখছে। কেমন জানি ঘোড় লাগা দৃষ্টিতে দেখছে। নিলা ছবিটা নিয়ে আবারো জানালার বাসে গিয়ে বসলো। নিলা ছবিটাকে দেখছে মুচকি মুচকি হাসছে। ছবিটার দিকে তাকিয়ে হালকা স্বরে বলল,

“তুমি আমায় এখনো চিনতে পারো নি! তার মানে তুমি সত্যিই আমাকে ভুলে গেছো! কিন্তু চিন্তা করো না। আমি আবারো তোমার মনে আমার জন্য ভালোবাসার সৃষ্টি করবো। ১১ বছর আগে যেভাবে আমায় ভালোবাসতে এখনো ঠিক সেভাবেই বাসবে। শুধু পার্থক্যটা হলো, তোমার কাছে ১১ বছর আগের আমি আর এখনের আমি দুজন আলাদা মানুষ। তোমার কাছে মনে হবে আমি তোমার জিবনের দ্বিতীয় ভালোবাসা। কিন্তু তুমি জানবেও না যে, আমিই তোমার জিবনের প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা”

বিকট শব্দ হলেও রায়ানের নিজের শরীরে কোন ব্যাথা অনুভব না হওয়ায় রায়ান এবার ধিরে ধিরে চোখ খুললো। চোখ খুলেই সে নিজেকে একদম ঠিকঠাক অবস্থায় দেখল। ঠিক যেভাবে বসে ছিল সেভাবেই বসে আছে। সামনে এখন কোন ট্রাক নেই। পুরো রাস্তা ফাঁকা। যা রায়ানের পুরো মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে গেছে। তাহলে রায়ান যে ট্রাকটাকে দেখল সেটা কোথায়? আর ট্রাকটা রায়ানের এতো কাছে এসেও কোথায় গেলো? রায়ান বিষয়টা ভালোভাবে বোঝার জন্য এবার আশেপাশে তাকালো। হুট করেই রাস্তার পাশের মাঠে বিশাল ট্রাকটাকে উল্টে পরে থাকতে দেখে আতকে উঠলো। তারাতারি গাড়ি থেকে মেনে সেদিকে গেলো। চিকন রাস্তার দুপাসেই মাঠ। আর ট্রাকটা আক পাশের মাঠে উল্টো হয়ে পরে আছে। মুলত ট্রাকটা রায়ানের একদম সামনে এসে সরে গিয়েছে। আর চিকন রাস্তায় কোন ঠাই না পেয়ে পাসে মাঠে উল্টে পরেছে। রায়ান এবার দৌড়ে ট্রাকের ড্রাইভিং সিটের দিকে গেলো। সেখানে গিয়েই একজন বৃদ্ধ লোককে আহত অবস্থায় দেখলো। রায়ান তারাতারি করে বৃদ্ধের হাত ধরতে গেলে বৃদ্ধটি হঠাৎই পাগলের মতন হাত পা ছোটাছুটি করা শুরু করে। আর পাগলের মতন এদিক অদিক তাকিয়ে বলতে শুরু করেন,

“আমি বাইচা রইছি? কির লাইগা? কেডা বাচাইছে আমারে? এই পোলা! তুই বাচাইছস আমারে? কির লাইগা বাচাইলি? এখন তো আমারে ওই অভিশাপে মরা লাগবো! আমি একডা সহজ মৃত্যু চাইছিলাম। কিন্তু এই পোলা! তুই আমারে মরতে দিলি না! এখন আমারে ওয় মারবো। কষ্টে মারবো! মারবো! মারবো!”

“আপনি শান্ত হন! কেও আপনাকে মারবে না”

রায়ান যেই না বৃদ্ধাকে আবারো ধরতে যাবে তখনি বৃদ্ধা রায়ানকে এক ধাক্কা দিয়ে দূরে ছিটকে ফালায়। রায়ান ট্রাকটার টায়ারের উপর হালকা ভর দিয়ে দাড়িয়ে ছিল। তাই বৃদ্ধার ধাক্কায় ব্যালেন্স রাখতে না পেরে দূরে গিয়ে পরে। কিন্তু রায়ান দূরে ছিটকে পরার সঙ্গে সঙ্গে পুরো ট্রাকটাতে আগুন লেগে যায়। চোখের পলকে ট্রাকটাকে এভাবে আগুনে পুরতে দেখে রায়ান স্তব্ধ হয়ে যায়। কোন কিছুই রায়ানের মাথায় আসছে না। কি হচ্ছে এখানে? ওর সাথে কি কেও মজা করছে? এভাবে একের পর এক ভয়ংকর দৃশ্য কেন দেখতে হচ্ছে ওকে? রায়ান সেখানেই বসে বসে হা হয়ে ট্রাকটাকে পুরতে দেখছিল। কিন্তু তখনি ওর গায়েও আগুনের তীব্র তাপ আর ছিটকা আসতে শুরু করলে ও সেখান থেকে উঠে কিছুটা দূরে সরে আসে। আর সন্ধ্যার সময়ে নিজের চোখের সামনে এত বড় একটা ট্রাককে শেষ হয়ে যেতে দেখছে রায়ান।

প্রায় কিছুক্ষনের মধ্যে সেখানে পুলিশ চলে আসে। আর জায়গাটাকে সিল করে তদন্ত শুরু করে। রায়ান তাদেরকে শুরু থেকে সবকিছুই বলে যেখান থেকে চলে এসেছে।

রাতের অন্ধকারে রায়ান তার অসিফের ছাদে দাড়িয়ে আছে। সে ভাবছে, গভীরভাবে ভাবছে। কিন্তু আজকের তার ভাবনার বিষয় সংখ্যা ২৩ নয় বরং আজ সে নিলাকে নিয়ে ভাবছে। নিলা যেন একদম হুট করেই তার জিবনে চলে এসেছে। রায়ান তো ভেবেছিল সে আর কাওকেই কোনোদিন ভালবাসবে না! তাহলে সে কিভাবে দ্বিতীয় বারের মতন কারো প্রেমে পড়লো। সে আবার কাওকে ভালবেসে ফেলেছে। আচ্ছা নিলাও যদি তাকে সেইভাবে ফেলে রেখে চলে যায়? তখন রায়ানের কি হবে? রায়ান কি আর উঠে দাঁড়াতে পারবে? রায়ান কি বেঁচে থাকতে পারবে? নিলা যে এখন তার বেঁচে থাকার একমাত্র উদ্দেশ্য। নিলার জন্য সে এখন বাঁচতে চায়। আচ্ছা… রায়ান কি তার ভালোবাসার মানুষকে এমন এক ভয়ংকর কেসের সাথে জুরে দিয়ে ঠিক করলো? আজও তো সেই লোক তাকে মারার হুমকি দিলো। সেই ট্রাকটির নাম্বার ছিল ‘২৩২৩২৩’ । অর্থাৎ সেই ট্রাকটি ছিল রায়ানের ওয়ার্নিং। লোকটি তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে! কেননা সে লোকটির বিরুদ্ধে লড়ছে। আর সেই হিসেবে তো নিলাও সেই লোকের বিরুদ্ধে লড়ছে। তাহলে কি সেই লোক নিলাকেও বিপদে ফেলার চেষ্টা করবে? করতেই পারে! আর আত মানে নিলার জিবন এখন ঝুকিতে আছে। রায়ান কিভাবে নিলাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করবে?

রায়ান প্রায় অনেক্ষন ধরেই ছাদের এক পাসে দাড়িয়ে অনেক কিছু নিয়ে অনেক কিছু ভাবছে। কিন্তু এখন ভাবতে ভাবতে হঠাৎই তার ১১ বছর আগের কথা মনে পরে গেলো। সেই কথা মনে পরতেই রায়ান পাশের রেলিংএ জোরে ঘুসি মারলো। রায়ান ধিরে ধিরে সেই ঘটনা মনে করতে লাগলো,

ঘটনাটা আজ থেকে আরও ১১ বছর আগের। তখন রায়ানের ১৯ বছর বয়স। রায়ান তখন এক মেয়ের সাথে সম্পর্কে ছিলো। মেয়েটির নাম ছিলো সাহরিয়া ইসলাম। রায়ান তাকে সারা বলে ডাকতো। মেয়েটির সাথে রায়ানের ছোটকাল থেকে বন্ধুত্ব। তারা একই এলাকায় থাকতো। মেয়েটি রায়ানের পাশের বাসায় থাকতো। রায়ানের যখন ১৬ বছর বয়স তখন সে মেয়েটির সাথে সম্পর্কে যায়। তখন সে দশম শ্রেণীতে আর মেয়েটি অষ্টম শ্রেণীতে পড়তো। রায়ান তখন অনেক হাসিখুশি একজন ছেলে ছিলো। সে মেয়েটিকে অনেক বেশি ভালোবাসতো। মেয়েটির সাথে অনেক স্বপ্ন ছিলো। তারা একসাথে অনেক স্বপ্ন বুনেছিলো। কিন্তু হঠাৎ একদিন মেয়েটি সেই এলাকা ছেড়ে দেয়। এমনকি রায়ানের সাথেও সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। রায়ান তারপর মেয়েটিকে অনেক খুঁজেছে। কিন্তু কোথাও পায় নি। আর সেই মেয়ের সেভাবে চলে যাওয়ার পর থেকেই রায়ান চুপচাপ আর গম্ভীর স্বভাবের হয়ে যায়। রায়ান আজও জানে না সেই মেয়ে কেন তাকে অভাবে ফেলে রেখে গিয়েছিল? চলে গেলেও ফোনে বা অন্য মাধ্যমে যোগাযোগ তো রাখতেই পারতো। কেন এমন করলো সে? রায়ান তো তাকে সত্যিই অনেক ভালবেসেছিল। যদিও রায়ান ভেবেছিল সে তার পরে আর কাওকে ভালবাসতে পারবে না! কিন্তু সে এখন আবারো কাওকে ভালবেসে ফেলেছে। রায়ান নিলাকে ভালবেসে ফেলেছে। আর সে এখন নিলাকে কোনোভাবেই আর হারাতে পারবে না। রায়ানের ভাবনার মাঝেই হঠাৎ পকেটে থাকা ফোনটা বেজে উঠলো। রায়ান তখনি ফোনটা হাতে নিয়ে কল রিসিভ করলো। কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মাসুম বলে উঠে,

“স্যার! আপনার চাওয়া তথ্য গুলো পেয়েছি”

“হুম। পাঠিয়ে দেও। আমি দেখে নিচ্ছি”

“স্যার! আসলে… আবারো একটা খারাপ খবর আছে”

মাসুমের কথায় রায়ান কান থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে টাইম দেখলো। এখন রাতের ২৩ টা ২৩ বাজে। অর্থাৎ রায়ানকে এখন কিছু মৃত্যুর সংখ্যা শুনতে হবে। সেই উদ্দেশ্যে রায়ান ফোনটা আবার কানে নিলে মাসুম বলে,

“স্যার! আজকে আরও ৯ জন মারা গেছে!”

মাসুমের কথায় রায়ান অনেক ঘাবড়ে যায়। এই লোক তো দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বারিয়েই যাচ্ছে! রায়ান মাসুমের কথা শুনে ফোনটা কেটে দিলো। তারপর দ্রুত মাসুমের পাঠানো ফাইলগুলো দেখলো। ফাইলে ১১ বছর আগের সকল খুনের জায়গার নাম দেওয়া আছে। রায়ান জায়গার নামগুলো দেখেই সাথে সাথে বড় বড় চোখ করে তাকালো। কেননা সেই বছরে মোট ২৩ টা খুন হয়েছে। আর তার মধ্যে প্রথম ২০ টাই বাংলাদেশে। রায়ান এটা জেনে অনেক বেশি অবাক হল যে এই লোক ওর নিজের দেশেরই একজন নাগরিক। রায়ানের কাছে এখন বিষয়টা আরও বেশি সহজ হয়ে গেলো। এখন খুনি পুরো পৃথিবীর না বরং মাত্র একটি দেশের মানুষদের মধ্যেই আছে। লোকটির বর্তমান অবস্থান হয়তো বাংলাদেশ না। কেননা সে নিজের দেশে অবস্থান করবে না। তবে সে বাংলাদেশেরই নাগরিক।